আমার জন্যই পৃথিবী ছাড়লে তুমি
আমি তখন খুব ছোট। চতুুর্থ শ্রেণীতে পড়ি। ক্লাসের পড়া শেষ হলে আমরা স্কুলের সামনের মাঠে খেলাধুলা করতাম। আর খেলার ছলেই সোনালি নামে একটি মেয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়। কিছু দিনের মধ্যেই সে অামার ভাল বান্ধবি হয়ে যায়। আমাকে না নিয়ে কোথাও গেলে আমার রাগ লাাগত। এমনও হত আমি অভিমান করলে তিন-চার দিন কথা বলতাম না। সোনালি কে আদর করে ডাকতাম সোনা-রুপা। ও আমার এত ভাল বন্ধু হলো যে, আমার সাথে পড়ার জন্য এক বছর ড্রপ দিয়ে আমার সাথে এক ক্লাসে ভর্তি হল। অনেক খেলাধুলা আর আনন্দে আমাদের দুই বছর কেটে গেছে। আমরা এক সাথে ক্লাস সিক্সে ভর্তি হলাম। সমস্যাটা হলো সিক্সের ফাইনাল পরিক্ষার কয়েক দিন আগে। আমি ক্লাস শেষ করে বের হয়ে দেখি ক্যান্টিনে সোনালি অন্যসব বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। এদৃশ্য দেখে অভিমানে রাগে আমার মুখ লাল হয়ে গেছে। সোনালি আমাকে দেখে দৌরে এসেছে, আমি ওর সাথে কোন কথা বললাম না এবং ওর কথার কোনা পাত্তা না দিয়ে বাসায় চলে এলাম। বাসায় আসার পরে ও মায়ের ফোনে অসংখ্য বার কল দিয়েছে। ম্যাসেজ দিয়ে নানা ভাবে কথা বলার চেষ্টা করেছে। আমি কথা বলিনি মাকেও কথা বলতে মানা করে দিয়েছি। কোন ম্যাসেজ এরও উত্তর দেই নি। এভাবে দেখতে দেখতে পরিক্ষা চলে এলো। ওর সাথে কথা না বলে থাকতে আমার ও খারাপ লাগছিল। ভাবলাম পরিক্ষার দিন সব মিটমাট করে নেব।
কিন্তু বিধির কি নির্মম পরিহাস পরিক্ষা শুরু হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সোনালি কে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠৎ এক মেয়ে খবর নিয়ে আসল সোনালি নাকি মারা গেছে। আমি ভাবলাম। সোনালি আমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য এখবর পাঠিয়েছে। আমি তো এসব কথার পাত্তাই দিলাম না । কিছুখন পরে ক্লাসের সবার কাছ থেকে শুনছি সোনালি নাকি আসলেই মারা গেছে। তখন আর অবিস্বাস করতে পারলাম না। একটু পরেই পরিক্ষা কি করব কিছু বুজে উঠতে পারছিনা। কিছুখন এর মধ্যেই পরিক্ষা শুরু হয়ে গেল। কোন রকম পাস মার্ক উঠানোর মত করে পরিক্ষা দিয়ে সরাসরি সোনালিদের বাসায় গেলাম। গিয়ে দেখি মানুষের প্রচন্ড ভির। এবার আর আমার বুজতে বাকি রইল না। সোনালি আসলেই পৃথিবীতে নেই। বুকের বেতরটা চিন চিন করে ব্যাথা করে উঠল। মাথাটা ঘুরছে। কাকে কি বলব কিছু বুঝে উঠতে পারছি না।দৌরে ওর রুমের বেতর যেয়ে দেখি ওখানে সোনালির নিথর দেহ পরে আছে। তখনই মনে পরল ওর একটা ম্যাসেজ এর কথা। ও লেখছিল দেখ তুই আমার সাথে যদি কথা না বলস আমি কিন্তু আত্মহত্মা করব। আমি একি করলাম। নিজের কাছে নিজেকে খুব অপরাধি মনে হল।আমার কারনেই সোনালি আজ পৃথিবীতে নেই। কিছু দিন পরে সোনলির আম্মাকে সব কিছু খুলে বললাম। ভেবেছি ওরা আমাকে অনেক শাস্থি দেবে কিন্তু না তারা আমাকে কোন শাস্থি দিল না বরং মাফ কলে দিয়েছে। আজও আমার সাথে সোনালির মা-বাবার সাথে যোগাযোগ হয়। উত্তরায় ১২নম্বর সেক্টরে একটি ফ্লাটে থাকে তারা । কিছু দিন পর পর আমি তাদের দেখতে যাই।
শিক্ষনিয়: কাছের মানুষের সাথে অভিমান দু-চার মিনিটের বেশি হলেই বিপদ হতে পারে।
valo laglo golpota
ReplyDeleteআমার বোন বলেছে গল্পটা ফাটাফাটি হয়েছে আপনারা আপনাদের মতামত জানান............
ReplyDelete