এরাও মানুষ
আজ শুক্রবার তাও অফিস খোলা। অনেক বিরক্তি আর অনিহা নিয়ে অফিসের উদ্যশ্যে রওআনা হলাম। মনটা তেমন ভাল না, ভেবেছি আজ একটু সবাই বেরাতে যাব, তা আর হলো না। অটোতে উঠলাম, উঠে দেখি পাশে দুইটা ছোট ছোট বাচ্চা বসে আছে। ওদের হাতে খাবারের বাটি। দেখে জিজ্ঞেস করলাম....................
- কোথায় যাও?- কামে।
- কি কাজ কর??
- কারখানায় কাম করি।
- বেতন কত তোমার?
- ৩ হাজার টেকা?
- তো তোমার ছোট ভাইকে সাথে নিচ্ছ কেন?
- অয় আমর লগে কাম করে।
- ওর বেতন কত?
- ২.৫(আড়াই) হাজার টেকা।
- কতক্ষন কাজ কর?
- সকাল ৯টা হইতে রাইত ১০টা লাগাত।
- আজ তো শুক্রবার আজ তোমাদের খোলা কেন?
- আমাগো কোন বন্ধ নাই।
- রাতে বাসায় যেতে অসুবিদা হয় না।
- না, যাইতে যাইতে অভ্যাস হয়া গেছে।
- তোমার বাবা কি করে?
- বাবার অসুখ,
- মা?
- মা বাসায় থাহে বাবার সেবা-যত্ন করনের লাইগা।
আমার আজ এক শুক্রবার অফিস খোলা, তাই কতটা বিরক্ত হলাম অথছ, এই ছোট ছোট বাচ্চাদের কোন ছুটি নেই। তারা নিয়মিত কাজ করে অাসছে। অমি অনেক অভাক হলাম। ওর ছোট ভাইটা মনে হয় কিছু দিন আগে কথা শিখেছে। কিন্তু এই বয়সে ওরা স্বাচ্ছন্ধে কাজ করতে যাচ্ছে। জীবিকার তাগীদে নিজের খেলা-ধুলা, পরা-লেখা সব কিছু বিসর্জন দিয়ে জীবন যুদ্ধে নেমেছে। আসলে আমরাতো এমনটাই চাই। কাজ না করে যদি বেকার বসে থাকে তাহলে দেশ আগাবে কিভাবে??? কিন্তু এই বয়সে না। তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক হলে। কিন্তু এদের তো বাধ্য হয়ে কাজে যেতে হচ্ছে।
যদিও স্পর্শকাতর অনুরোধ তবুও দঃখের সাথে জানাচ্ছি এই বাচ্ছা গুলোকে কেউ চাকরি থেকে বের করে দেবেন না। পারলে এদের মতো কাউকে পেলে চাকরি দিয়ে দিয়েন।। কারন এই বাচ্চা গুলি চাকরি না পেলে খারাপ পথ বেছে নেবে। এদের লালন-পালন করার মত কোন অভিবাবক নেই বরং এই বয়সেই তারা তাদের বাবা-মা কে লালন পালন করার দায়িত্ব মাথায় নিয়ে নিয়েছে।
শিক্ষনীয়: আমাদের সমাজটাকে বদলে দেয়া আমাদের দায়ীত্ব।
No comments